শনিবার, ১০ মে, ২০১৪

এক একটি মানুষ


অংশু মোস্তাফিজ
ফৌজদারি মামলায় আমি জেলখানায়। খুনের অভিযোগ। এর তিন নম্বর আসামী আমি। যারা খুন করেছে তিতাসের বাবা তাদের চেনেন। কিন্তু তার ধারণা যদি সত্যি না হয়, তাই তিন নম্বার আসামী করেছেন আমাকে। তিতাস আর আমি পাশাপাশি থাকি। কলেজপাড়ার শেষ মাথার একটি পাঁচ রুমের মেস, যেখানে তিনমাস ধরে কেবল আমি আর তিতাস আছি দুটো রুমে। পাশাপাশি রুম। ও ঘরে কথা বললে এ ঘর থেকে শোনা যায়। তিতাসের বাবা এসেছিলেন কয়েকদিন আগে। সম্ভবত ওর অন্তোষ্টক্রিয়া সেরেই। ভর দুপুর। আমি ঘুম থেকে জেগে একটা সিগ্রেট টানছিলাম যার মথ্যে গাঁজার পাতা ছিল। আমি একা থাকায় এ মেসে কেউ আসে না। তিতাস হারিয়ে যাবার পর আর কেউই আসেনি। ভালই কাটছিল আমার। সময়-গুলোকে খুব নিজের মনে হচ্ছিলো। কলিংবেলের শব্দ হলো। আবার হলো। কে আসতে পারে বুঝতে পারছি না। বেল আরো কয়েকবার বাজলো। আমি সিগ্রেট শেষ করে তবে গেট খুলতে গেলাম। তিতাসের বাবা এসেছেন। সাথে আরো দু’জন সমবয়সী। আমি বিছানা ঝেড়ে সবিনয়ে তাদের বসতে বললাম। একজন জিজ্ঞাসা করলেন, তিতাসের জানাজায় যাওনি কেন? সিগ্রেট টেনে স্থির ছিল মাথা। তিতাসের জানাযা শুনে মেলাতে পারছিলাম না। জানতে চাইলাম তিতাসের জানাজা মানে কি? তিতাসের বাবা শব্দছাড়া কাঁদছেন। অন্যজন বললেন, গতকাল রাতে করতোয়া নদীতে পচানো পাটের নিচে তিতাসের লাশ পাওয়া গেছে। তুমি এটা জানতে না? না, বলে বসে পড়লাম আমি। একটা সিগারেট এবং একটা মিষ্টিজাতীয় চকোলেট নিতে ইচ্ছে করলো। আমি সেটা নিতে পারলাম। কেননা তখনই তিতাসের বাবা কান্না থামিয়ে বললেন সাবধানে থেকো। তারপর চলে গেলেন। গতপরশু পুলিশ আমাকে জেলে এনেছে। (লেখা চলছে)

কোন মন্তব্য নেই: